সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকারের হাতে বেশি সময় নেই। এক পশলা বৃষ্টি হলে রাস্তা নাই হয়ে যায়। দেশের মানুষের সঙ্গে এই প্রতারণা আমরা কেন করছি? কিছু কিছু প্রকৌশলীর কারণে সব প্রকৌশলী দায়ী হবেন কেন? অসাধু প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। যেসব ঠিকাদার ঠিকমতো কাজ করেন না, তাদের বাদ দিয়ে দিতে হবে। রাস্তা নির্মাণে ত্রুটি ঠিক করতে হবে।
রোববার বিআরটিএ সদর দপ্তরে এক ঈদ প্রস্তুতি সভায় তিনি এসব নির্দেশনা দেন। এ সভায় সড়কের নাম উল্লেখ করে যানজটের কারণ তুলে ধরেন পরিবহন মালিকেরা। তারা যানজট নিরসনে প্রশাসনের যথাযথ হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ সময় তিনি ঈদে সড়কে যানজট ঠেকাতে ফিটনেসবিহীন গাড়ি উঠিয়ে নেয়া, সড়ক খোড়াখুড়ি বন্ধসহ তিনটি নির্দেশনা দিয়েছেন।
সভায় ওবায়দুল কাদের বলেন, ঈদে সড়ক যানজটমুক্ত রাখতে হলে কয়েকটি বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিআরটিএকে আমি তিনটি নির্দেশনা দিব, এগুলো পালন করতে হবে। একটি হলো রাস্তায় ফিটনেসবিহীন কোনো গাড়ি না থাকার নিশ্চয়তা চাই। আরেকটি হল, উল্টো পথে গাড়ি চলাচল বন্ধ করা। উল্টো পথে গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখতে হবে। আর বাকিটা হল যেকোনো মূল্যে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধ রাখতে হবে।
তিনি বলেন, রাস্তায় যানজটের অন্যতম কারণ ফিটনেসবিহীন গাড়ি। এসব গাড়ি রাস্তায় বিকল হয়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি করে। উল্টো পথে গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে হবে এবং করতেই হবে।
তিনি বলেন, রোববার থেকে ঢাকায় সড়কের উন্নয়নের জন্য সকল ধরনের খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধ থাকবে। ঈদের পর এই কাজ শুরু হবে। আর ৮ জুন থেকে রাস্তা নির্মাণের কোনো কাজ হবে না। এই কাজও ঈদের পর শুরু হবে। ঈদের আগে পরে মোট ১৫ দিন কোনো রাস্তায় কোনো নির্মাণ কাজ হবে না।
এ সময় বাস মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, রাস্তা থেকে ফিটনেসবিহীন গাড়ি উঠিয়ে নিতে হবে। ব্রিজের টোল দ্রুত পরিশোধের জন্য পরিবহন ড্রাইভারদের ভাংতি টাকা রাখার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, টোল দিতে গেলে আপনারা ভাংতি টাকা নিয়ে যাবেন। না হলে টোল দিতে দেড়ি হয়। নোট ভাংতি করতে তো সময় লাগে।
প্রস্তুতি সভায় বাস মালিকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ঈদের সময় কিছু বাস রং করা হয়, তবে রং করা মানেই সব ফিটনেসবিহীন গাড়ি নয়।
তারা জানান, মানিকগঞ্জ-রাজবাড়ি মহাসড়কের অবস্থা ভালো না। এই মহাসড়কে দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া ফেরিঘাটে ইচ্ছা করে যানজটের সৃষ্টি করে ফেরিঘাট সংশ্লিষ্ট লোকজন। ফেরি ভালো থাকলেও চালানো হয় না এবং ধীর গতিতে চালানো হয়। এছাড়া কুমিল্লা, গাজীপুর চৌরাস্তা এবং চন্দ্রা এলাকায় যানজট সৃষ্টির জন্য ফিটনেসবিহীন গাড়ি থামিয়ে রাখাকে দায়ী করেন বাস মালিকরা।
মহাসড়কে যেখানে-সেখানে ট্রাক দাঁড় করানোর কারণেও যানজট সৃষ্টি হয় বলে জানান তারা। সভায় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, বিআরটিএর চেয়ারম্যান মো. মশিয়ার রহমান, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ, করামিস্ট ও লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ সভায় উপস্থিত ছিলেন।